আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
ভাব-সম্প্রসারণ: পরার্থপরতায় পরম আনন্দ, অনাবিল সুখ এবং গভীর পরিতৃপ্তি। পরের হিতার্থে নিজেকে নিঃশেষে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যেই মানবজীবনের সার্থকতা নিহিত। পরহিতব্রতী মানুষেরাই পায় জগতে অমরত্বের স্বীকৃতি। একক মানুষ খুবই ক্ষুদ্র, অতি নগণ্য। ক্ষুদ্রতার বৃত্ত ভেঙে সমষ্টির অংশ হওয়ার প্রয়োজনেই মানুষ গড়ে তুলেছে সমাজ। সমাজের মধ্যে সে খুঁজে পায় বৃহত্তের পরিধি। এ জন্য মানুষকে আত্মপরায়ণতার ক্ষুদ্র পরিচয় বিসর্জন নিতে হয়। সমাজের বৃহৎ মানবগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখের জীবনের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করতে হয়। নিজের হিতাহিত ভুলে গিয়ে জগতের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করলেই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে মানবজনম সার্থক হয়। জগতের সকল মানুষের কল্যাণচিন্তা ও মঙ্গলকামনার মধ্যেই মানুষের মনে এক নিবিড় শান্তি লুকিয়ে থাকে। জগতের ভাল-মন্দ, শুভ-অশুভ থেকে চোখ ফিরিয়ে নিজেকে নিয়ে ব্যাপৃত হওয়া মানেই উনার, উন্মুক্ত আকাশের তলা থেকে সরিয়ে নিয়ে আলো-বাতাসহীন ক্ষুদ্র গৃহকোণে নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলা। আত্মতাময় জীবনে বৃহৎজীবনের সঙ্গে কোনো যোগ থাকে না, আনন্দ-বেদনার কোনো প্রবাহ থাকে না, তাই
সেই বিচ্ছিন্ন জীবনে কোনো শান্তি-স্বস্তিও থাকে না। স্বার্থমগ্ন মানুষেরা অন্যের ভালবাসার উষ্ণতা থেকে বঞ্চিত হয়ে এক হাহাকারক্লিষ্ট হতভাগ্য জীবন যাপন করে। জীবদ্দশায় সে বৃহৎজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে, মৃত্যুর পরে সে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ইতর প্রাণীদের মতো। বনের পশুরা বিদুর তাড়না নিয়ে আত্মতাময় জীবন কাটায়, আবার প্রকৃতির নিয়মে একসময় মৃত্যুকেও বরণ করে নেয়। মৃত্যুর মধ্য দিয়েই ইতর প্রাণীর চূড়ান্ত অবসান ঘটে, জগতে তার অস্তিত্বের কোনো চিহ্নরেখা অবশিষ্ট থাকে না। কিন্তু একজন সার্থক মানুষের মহাজীবন শুরুই হয় তার মৃত্যুর পরে, সে জীবন অমরত্বের।
মানুষের প্রতি তার আত্মনিবেদন ও কর্মের পরিধির নিরিখেই মহাকালের পৃষ্ঠায় তার স্থান নির্দিষ্ট হয়। মানুষ মানুষের চেতনায় বেঁচে থাকে তার মহৎ কর্মের মধ্য দিয়ে, মানবমঙ্গলে তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে। আত্মসুখে বিভোর মানুষেরা সেই মহাজীবনের খোঁজ পায় না, সেই জীবনের তৃপ্তি থেকে সে বঞ্চিত হয়। অবসাদ ও হতাশায় মোড়ানো জীবন কাটিয়ে ইতর প্রাণীর মতোই একসময় সে চিরতরে হারিয়ে যায়। এই পরিচয় মানুষের জন্য কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না। যাবতীয় ইতর-প্রবৃত্তি, স্বার্থান্ধতা ও আত্মমুখের ভাবনা পরিত্যাগ করে মানুষ হবে সকলের প্রতি দায়িত্বশীল, পরহিতব্রতী, জগতের
মঙ্গলসাধনে আত্মনিবেদিত সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে এটিই মানুষের আসল পরিচয়।
সেই বিচ্ছিন্ন জীবনে কোনো শান্তি-স্বস্তিও থাকে না। স্বার্থমগ্ন মানুষেরা অন্যের ভালবাসার উষ্ণতা থেকে বঞ্চিত হয়ে এক হাহাকারক্লিষ্ট হতভাগ্য জীবন যাপন করে। জীবদ্দশায় সে বৃহৎজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে, মৃত্যুর পরে সে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ইতর প্রাণীদের মতো। বনের পশুরা বিদুর তাড়না নিয়ে আত্মতাময় জীবন কাটায়, আবার প্রকৃতির নিয়মে একসময় মৃত্যুকেও বরণ করে নেয়। মৃত্যুর মধ্য দিয়েই ইতর প্রাণীর চূড়ান্ত অবসান ঘটে, জগতে তার অস্তিত্বের কোনো চিহ্নরেখা অবশিষ্ট থাকে না। কিন্তু একজন সার্থক মানুষের মহাজীবন শুরুই হয় তার মৃত্যুর পরে, সে জীবন অমরত্বের।
মানুষের প্রতি তার আত্মনিবেদন ও কর্মের পরিধির নিরিখেই মহাকালের পৃষ্ঠায় তার স্থান নির্দিষ্ট হয়। মানুষ মানুষের চেতনায় বেঁচে থাকে তার মহৎ কর্মের মধ্য দিয়ে, মানবমঙ্গলে তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে। আত্মসুখে বিভোর মানুষেরা সেই মহাজীবনের খোঁজ পায় না, সেই জীবনের তৃপ্তি থেকে সে বঞ্চিত হয়। অবসাদ ও হতাশায় মোড়ানো জীবন কাটিয়ে ইতর প্রাণীর মতোই একসময় সে চিরতরে হারিয়ে যায়। এই পরিচয় মানুষের জন্য কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না। যাবতীয় ইতর-প্রবৃত্তি, স্বার্থান্ধতা ও আত্মমুখের ভাবনা পরিত্যাগ করে মানুষ হবে সকলের প্রতি দায়িত্বশীল, পরহিতব্রতী, জগতের
মঙ্গলসাধনে আত্মনিবেদিত সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে এটিই মানুষের আসল পরিচয়।
0 Comments